মোঃ নাজমুল হুদা:
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে মদ বার। এই রমরমা ব্যবসা মদ বারের আড়ালে নারীদের দিয়ে দেহব্যবসা পরিচালনা করার অভিযোগ উঠেছে।ভুক্তভোগী অনেক পরিবারের ভেঙে যাচ্ছে সোনার সংসার প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে দাম্পত্য কলহ।তথ্য সংগ্রহ করতে মদ বারে গেলে দেখা মিলছে অনেক তরুণ তরুণী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এবং ধনাঢ্য পরিবারের সন্তানদের যাদেরকে দেখলে অনুমান করা যায় তাদের বয়স ১৬/১৭ এরা রীতিমতো প্রতিদিনের খদ্দের কেউবা আসেন শুধু অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য। আর এই ব্যবসার সাথে জড়িত থাকেন সরাসরি খোদ বার কর্তৃপক্ষের মালিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। এছাড়াও অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তোয়াক্কা না করে অনুমোদন বিহীন মদ বার বসিয়ে লাইসেন্সবিহীন ক্রেতাদের নিকট মদ বিক্রি করছেন, এমনকি সমাজের অপ্রাপ্ত বয়সের তরুণ তরুণীর কাছেও বিক্রি করছে এবং তাদেরকে মদ বারে প্রবেশের জন্য ও উন্মুক্ত রেখেছে মদ বার কর্তৃপক্ষ। মদ বারে পতিতা বৃত্তি ও তাদের প্রবেশাধিকার বন্ধ সহ লাইসেন্স বিহীন মদ বিক্রি বন্ধের জন্য প্রশাসনের নজরদারি ও নিয়মিত অভিযান পরিচালনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের জনগণ। ঢাকা শহরের বিভিন্ন মদ বারের আড়ালে কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ইশারায় অবৈধ মাদক ও দেহ ব্যবসা পরিচালানা করা হচ্ছে। এমন এক অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শহরের বেশ কিছু মদের বারে অভিযান পরিচালনা করেন, এবং অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হন। পরবর্তীতে এসব অবৈধ মাদক কেনা বেচা ও পতিতাবৃত্তিতে সরাসরি সহযোগিতার অপরাধে বারের বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তাঁর পরেও থেমে নেই এই মদ বারের অবৈধ ব্যবসা। উক্ত ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর সরকারকে ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা।বিশেষ সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরার অধিকাংশ বারে কেবলমাত্র লাইসেন্সকৃত মদ বিক্রি ও পরিবেশন করার কথা থাকলেও, তারা অবৈধ মাদক ও খদ্দেরদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে গোপনে যৌনকর্মীদের মাধ্যমে দেহ ব্যবসার অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সরজমিনে উওরার কিংফিশার ও কোরিয়ান ক্লাবে অভিজাত শ্রেণির মানুষের জন্য বিশেষ ‘ভিআইপি রুম’ রাখা হয়েছে, যেখানে পতিতা বৃত্তি সহ গোপনে অবৈধ লেনদেন চলে।আর এগুলো পরিচালনা করে বারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী বলেন, “আমি কয়েকবার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে কয়েকটি মদ বারে গিয়েছিলাম। পরে বুঝতে পারি, এখানে শুধু মদ পরিবেশনই নয়, গোপন রুমে রমরমা ভাবে দেহ ব্যবসাও চলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে। সম্প্রতি র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ঢাকার বনানী, গুলশান, উত্তরা ও মোহাম্মদপুর এলাকার কয়েকটি অভিজাত বারে দেহ ব্যবসার প্রমাণ মিলেছে। এসব অভিযানে বারের ম্যানেজার ওয়েটার সহ বেশ কয়েকজন দালাল ও যৌনকর্মীকে গ্রেপ্তার করে তাদের কে আইনের আওতায় আনা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই গোয়েন্দা নজরদারিতে রেখেছিলাম। এরপর নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযান পরিচালনা করি।”
বার মালিকদের অনেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কিছু অসাধু সদস্যদের ম্যানেজ করেই এই অবৈধ ব্যবসা চালানো হয়বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত বারগুলোর কার্যক্রম কঠোর ভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া। এ ছাড়া, লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন নিয়মিত কতৃপক্ষের পরিদর্শন করা তাহলে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।মদ বারের আশেপাশে বসবাস করা ভদ্র শ্রেণীর লোকেদের মন্তব্য, রাজধানীর বারগুলোতে দেহ ব্যবসার মতো অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে সাধারণ জনগণেরও সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি। যুবসমাজ ও সমাজের আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে মদ বারে পতিতা বৃত্তিতে জড়িত নারীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ সহ লাইসেন্স বিহীন ক্রেতাদের নিকট মদ বিক্রির জন্য প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব।
আপনার মতামত লিখুন :