দিনাজপুরের জামাই হলেন রেলমন্ত্রী

কালান্তর ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ সরকারের আগের মন্ত্রিসভায় রেলমন্ত্রী ছিলেন মো. মুজিবুল হক। ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন। একই পথে হাটলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনও।
৬৬ বছর বয়সে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মেয়ে শাম্মী আকতার মনিকে (৪২) বিয়ে করেছেন রেলমন্ত্রী। গত ৫ জুন শনিবার ইসলামী শরিয়াহ ও সরকারি আইন মেনে ঢাকায় হেয়ার রোডে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবন তন্ময়ে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
শাম্মী আকতার বিরামপুর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার অ্যাডভোকেট। আইন পেশার পাশাপাশি ঢাকায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতাও করেন তিনি। তার বাবার নাম মরহুম আব্দুর রহিম। তিনি দুই ভাইয়ের একমাত্র বোন তিনি।
শুক্রবার বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী টুটুল গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। কনের বড় ভাই মো. জাহিদুল ইসলাম মিলনও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
জাহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, আমার বোন শাম্মী ঢাকার উত্তরায় থাকে। সে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করছে। আইনি বিষয়ে পরমার্শ নিতে কিছুদিন আগে রেলমন্ত্রীর কাছে যায় আমার বোন। পরে আমার বোনকে মন্ত্রীর পছন্দ হয়। পারিবারিকভাবে ৫ জুন তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে বরপক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুরের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনে পক্ষে আমি ও আমার ভাই উপস্থিত ছিলাম।
তবে কত টাকা দেনমোহর ধার্য হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি।
পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর হন রেলমন্ত্রী। নূরুল ইসলাম সুজন পেশায় সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলারও একজন আইনজীবী ছিলেন।
ভালোলাগা প্রথম দেখায়, ২০ দিন পর বিয়ে
আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে হাইকোর্টে এক সিনিয়রের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছেন শাম্মী আকতার মনি। পাশাপাশি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার হিসেবে চাকরি করছেন ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে। আইনি পরমার্শ নিতে ২০ দিন আগে রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে দেখা করেন। সেই দেখাতেই ৪২ বছর বয়সী এই নারীর জীবনের মোড় ঘুরে যায়।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্ত্রী নিলুফার জাহানের মৃত্যুর পর একাকী জীবনযাপন করছিলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। পঞ্চগড়-২ আসনের ৬৫ বছর বয়সী এই সংসদ সদস্য কর্মমুখর জীবনের মাঝেই বোধ করছিলেন নিঃসঙ্গতা। মন্ত্রীর ভালো লাগে শাম্মী আকতার মনির দীপ্ত অভিব্যক্তি। ঘণিষ্ঠজনদের খোঁজ নিতে বলেন।
শাম্মী আকতার মনির এর আগে বিয়ে হয়েছিল কুষ্টিয়ায়। অনাকাঙ্খিত কারণে বনিবনা না হওয়ায় ২০১১ সালে তার ডিভোর্স হয়ে যায়। ওই সংসারে তার একটি মেয়ে রয়েছে। এরপর মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকায় চলে আসেন।
রেলমন্ত্রী তার ঘণিষ্ঠজনদের মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান শাম্মী আকতার মনির বড় ভাই মিলন হোসেনের কাছে। পরিচয়ের ঠিক ২০ দিন পর বেজে ওঠে রেলমন্ত্রীর বিয়ের সানাই। পারিবারিকভাবে গত ৫ জুন উত্তরায় শাম্মী আকতার মনির বাসাতেই তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়েতে বরপক্ষের হয়ে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুরের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনে পক্ষের ছিলেন শাম্মী আকতার মনির বড় দুই ভাই।
বিয়ের ৫ দিন পর গণমাধ্যমকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন নিজেই জানান এ খবর।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে শাম্মী আকতার মনি। তারা দুই ভাই এক বোন। দুই ভাই বিরামপুরে থাকেন। দুজনই ব্যবসায়ী।
বিয়ের বিষয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যকে বলেন, আমাদের আকদ হয়েছে। সেখানে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। কনেকে এখনও উঠিয়ে আনা হয়নি।
বড় কোনো আয়োজনের মাধ্যমে কনেকে নিজ বাড়িতে ওঠানোর পরিকল্পনা আপাতত করছেন না জানিয়ে সুজন বলেন, দেশের পরিস্থিতি তো এখন সেরকম নাই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে হয়তো চিন্তা করতে পারি।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতে প্রথমবার সাংসদ হন পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের নেতা নুরুল ইসলাম সুজন। পরে দশম এবং একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হন। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করলে নুরুল ইসলাম সুজনকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x