আশাশুনি থানা পুলিশের অভিযানে আটক ৩

আশাশুনি প্রতিনিধি :
আশাশুনি থানা পুলিশের অভিযানে ০১ জন নিয়মিত মামলার আসামী ও ওয়ারেন্ট মূলে ০২ জন মোট ০৩ জন আসামী গ্রেফতার।
আশাশুনি থানার সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ জনাব মোহাম্মাদ গোলাম কবির এর নেতৃত্বে আশাশুনি থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা কালে ইং-০৮/০৬/২০২০ তারিখ এসআই (নিঃ) সফিউল্লাহ মোল্যা সঙ্গীয় ফোর্স এর সহায়তায় নিয়মিত মামলা ৪(৬)২০২১ এর আসামী ১। মোঃ আবুল কালাম গাজী, পিতা-মৃত মুন্সি কেরামত আলী গাজী, গ্রাম-খড়িয়াটি, থানা-আশাশুনি, জেলা-সাতক্ষীরাকে খড়িয়াটি এলাকা হইতে গ্রেফতার করেন। এছাড়াও এএসআই (নিঃ) মোঃ নাজিম উদ্দীন সঙ্গীয় ফোর্স এর সহায়তায় সিআর-১৪১/১৯ ওয়ারেন্ট মূলে আসামী ২। মোঃ সেলিম গাজী, পিং-মোঃ সহিদ গাজী, এবং সিআর-২৯৩/১৯ ওয়ারেন্ট মূলে আসামী ৩। সিরাজুল সরদার, পিং-মোক্তার সরদার, উভয় সাং-খলিসানী, থানা- আশাশুনি, জেলা-সাতক্ষীরাদ্বয়কে তাহাদে নিজ নিজ বাড়ী হইতে গ্রেফতার করেন। আসামীদেরকে বিচারার্থে ইং-০৯/০৬/২০২১ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়। #

আশাশুনিতে করোনা পজেটিভ আরও ১৭ জন
করোনা ভাইরাসের ২য় ঢেউয়ের ছোবলে আশাশুনির সকল ইউনিয়ন এখন রোগিতে রোগিতে ভরতে শুরু করলেও সরকারি-বেসরকারি কোন পর্যায়ে তেমন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছেনা। প্রতিদিন রোগির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন করে গত ৭ জুন ১০ জন ও ৮ জুন ৭ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। করোনা উপসর্গ বা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রায় প্রতিটি গ্রামে রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। এলাকার ডাক্তারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রতিদিন যে সব রোগি তাদের কাছে আসছে তার বেশীর ভাগই জ্বর-সর্দি-কাঁশি-গলা-গা-হাতপা ব্যথা তথা করোনা উপসর্গ নিয়ে আসছে। যাদেরকে নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছেনা বা তারা নিজেরাও সাধারণ জ্বর ভেবে টেস্ট করাচ্ছে না।
গত বছর (১ম ঢেউয়ে) আশাশুনি উপজেলায় ৪১ জন করোনা পজেটিভ হয়েছিল। যার অধিকাংশই ভিন্ন জেলা থেকে আক্রান্ত হয়ে আশাশুনিতে এসেছিল। এসময় মারা গিয়েছিল মাত্র ৩ জন। তাদেরকে কঠোর ভাবে হোম কোয়ারিন্টিন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিন বা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
২য় ঢেউয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা ও ভারত থেকে আগত রোগিদের আগমনের মধ্যদিয়ে আশাশুনিতে করোনা রোগির আবির্ভাব ঘটে। বর্তমানে উপজেলার সকল প্রান্তে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ছে। ২য় ধাপে আশাশুনিতে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে (হাসপাতাল) ৬৮ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। সর্বমোট (১ম ও ২য় ধাপ) ১০৯ জন করোনা পজেটিভ এসেছে। সবশেষ নতুন করে ৭ জুন ১০ জনের ও ৮ জুন ৭ জনের মোট ১৭ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। শেষ দু’দিনে করোনা আক্রান্তরা হলেন, সমরেশ (৩০) পুইজালা, এরশাদ (৩৮) হাড়িভাঙ্গা, খুকুমনি (২৭) হাড়িভাঙ্গা, ইলিয়াছ (৩০) বড়দল, লাভলী (৪৫) গোদাড়া, জাহাঙ্গীর (৩৪) গুনাকরকাটি, রেজাউল (৫২) বুধহাটা, রনজিদা (২৫) কাদাকাটি, আঃ গফফার (৫৬) গদাইপুর, বাকী বিল্লাহ (৪০) গোদাড়া, মিনাজ (৬৫) গোদাড়া, রোজিনা (৩৬) গোদাড়া, ফতেমা (৫৫) গোদাড়া, শামছুন্নাহার (২৯) বুধহাটা, আবু ইছা (৪৩) নছিমাবাদ, বিধান (৪৫) কোদন্ডা ও আমিরুল (৪৫) গোদাড়া।
এসব হিসাবের বাইরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বহু রোগি করোনা উপস্বর্গ নিয়ে ২/৫ দিন থেকে ১০/১৫ দিন করে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসাধীন আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যারা নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেনা। এসব রোগির নমুনা সংগ্রহের জন্য সরকারি ভাবে উদ্যোগ নেওয়া এবং তাদেরকে হোম কোয়ারিনটিন নিশ্চিত করা দরকার। কেননা, তারা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কোন রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেনা।
অপর দিকে দুঃখ জনক হলেও সত্য ২য় ধাপে করোনা উপস্বর্গ নিয়ে মৃত্যুবরনকারীদের ব্যাপারেও তেমন কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। উপজেলার বাশারত হোসেন (৫৫), আঃ আলিম (৬০), সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ করোনা পজিটিভ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। এছাড়া উজ্জল চৌকিদারের মা পার্বতী রানা রাহা (৬০), বাক্কার (৪৫), আনোয়ার খাতুন করোনা উপসর্গ নিয়ে ইন্তেকাল করেন। তাদের বাড়ি লাল পতাকা টানিয়ে লকডাউন করা, সংস্পর্শে আসাদের কোয়ারিনটিনে রাখা ও পার্শ্ববর্তীদের সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কাজও যথাযথ হচ্ছেনা। #

বিদ্যুতের ছটফটানিতে আশাশুনির মানুষ নাজেহাল
যে কোন জিনিসের সীমা পরিসীমা থাকে। মানুষ সীমার মধ্যে থাকলে তা মেনে নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু সীমাহীন ও অসহনীয় কোন কিছু মানুষকে চরম দুঃখ ও কষ্টের মধ্যে ফেলে রাখে। পল্লী বিদ্যুতের ব্যবহার আশাশুনির গ্রাহকদেরকে এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি করে তুলেছে। ফলে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিব্যক্তি ও উদগীরিত প্রতিবাদের ভাষাও কষ্টের শেষ প্রান্ত স্পর্শ করে বের হচ্ছে।
উপজেলার মানুষ যুগযুগ ধরে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে। বিদ্যুৎ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের হাত বদলও দেখেছে তারা। তাদের ব্যবহার, বিদ্যুতের সেবাদান এবং ঝড়-বৃষ্টি, রৌদ্র-শীত, কৃষিক্ষেতে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কিছুর স্বাক্ষী আজকের গ্রাহকরা। সরকার কোটি কোটি মানুষের নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে, আবার রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুতের উৎপাদনও বাড়িয়েছে। আগে বিদ্যুৎ গ্রাহক কমছিল, বিদ্যুৎ কর্মীও ছিল খুবই সামান্য। বর্তমানে গ্রাহক বেড়েছে, অনেকগুণ কর্মীও বেড়েছে। বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। সেবার মানও অনেক ক্ষেত্রে বেড়েছে। কিন্তু মেঘ দেখলে বিদ্যুৎ উধাও, বৃষ্টি হলে বিদ্যুতের প্রস্থান, ঝড় হলে বিদ্যুতের গহীনে পলায়ন এবং ঘন্টার পর ঘন্টা নয় বরং দিনের পর দিন বিদ্যুতের দেখা না পাওয়া। দিনের মধ্যে শত শত বার বিদ্যুতের আনাগোনা, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য বিদ্যুতের চেহারা দেখিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লুকিয়ে রাখার মত ঘটনা এখন গ্রাহকদের কাছে পরিচিত কাহিনীতে রূপ নিয়েছে।
এমন ঘটনা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে বিদ্যুৎ বিভাগের অভিযোগ কেন্দ্রের নম্বরগুলো বন্ধ হয়ে যায়। আবার কখনো কখনো খোলা থাকলেও রিসিভ হয়না। আবার রিসিভ হলেও জবাবটা এমন আসে যে, তাদের কিছ্ইু করার নেই। মেইন লাইনে ফল্ট। কাজ চলছে। অথবা নিয়ম মত লোডসেডিং চলছে। অথবা জাতীয় গ্রিডের সমস্যা।
এমন ঘটনার অমন জবাব কিংবা ঘটনা যাই ঘটুক আর জবাব যাই আসুক, ফলাফল তথৈবচ। বরাবরের মত দিবারাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে সামান্য সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। অন্যথায় অপেক্ষার পালা সহ্য করতে হবে।
আশাশুনির বিদ্যুৎ গ্রাহকরা সত্যি চরম বিপত্তির মধ্যে রয়েছে। তারা কোন ব্যাখ্যায় বিশ্বাস রাখতে পারছেনা। তারা বিদ্যুৎ দেখতে চায়। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ চুলচেরা হিসাব করে দেখবেন কি? অবস্থার অবনতি বৃদ্ধি না ঘটিয়ে এর থেকে পরিত্রান চায় দুর্ভাগা আশাশুনির বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

x