বাগেরহাটে জলোচ্ছ্বাসে সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
বাগেরহাট প্রতিনিধি :
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ঠ জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কেয়ারবাজার টু সন্নাসী বাজার সড়কটির দুই জায়গা ভেঙে গেছে।
বুধবার (২৬ মে) দুপুরে জোয়ারের পানির তোড়ে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সড়কটির মোরেলগঞ্জ উপজেলার চালতাবুনিয়া গ্রামস্থ অধ্যাপক ইউসুফের বাড়ির সামনের সড়ক ১০ ফুট ভেঙে যায়। একই সময় ওই গ্রামের হাফেজ এমদাদের বাড়ির সামনের সড়কও প্রায় ১০ ফুট ভেঙে যায়। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, বাগেরহাট সদর উপজেলার চাপাতলা এলাকায় বাগেরহাট-রুপসা পুরাতন সড়কটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানেও যানচলাচল ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া জোয়ারের পানিতে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা উপজেলার বেশকিছু গ্রাম্য সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে যান চলাচল যেমন ব্যহত হচ্ছে, তেমনি স্থানীয়দের স্বাভাবিক চলাচলও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে, বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে জেলার সাইনবোর্ড-বগী আঞ্চলিক মহাসড়ক, মোংলা-জয়মনির ঘোল, দশানী-মোংলা, ছোলমবাড়িয়া-পিরোজপুরসহ সাতটি সড়কের বেশকিছু জায়গায় পানি উঠেছে। প্লাবিত হয়েছে মোরেলগঞ্জ ও মোংলা ফেরিঘাট।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার চালতাবুনিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, দুপুরে জোয়ারের পানিতে হঠাৎ করে অধ্যাপক ইউসুফের বাড়ির সামনের সড়কের প্রায় ১০ ফুট খালের মধ্যে চলে যায়। এর একটু পরেই পার্শ্ববর্তী হাফেজ এমদাদের বাড়ির সামনেও একই পরিমাণ রাস্তা খালের মধ্যে চলে যায়। কেয়ারবাজার থেকে সন্নাসী বাজার পর্যন্ত এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যায়। অনেকই এই পথে গাড়ি ও ভ্যান নিয়ে এসে বিপাকে পড়ে। আমরা চাই অতিদ্রুত এই সড়কটি সংস্কার করে যানচলাচল স্বাভাবিক করা হোক।
পানগুছি নদীর তীরে মোরেলগঞ্জ শহরের বারুইখালি গ্রামের জাহিদ বলেন, জোয়ারের পানিতে আমাদের বাড়িঘর তো ডুবেছে। সলিংয়ের রাস্তার অন্তত ২০ ফুট বিলীন হয়ে গেছে। এখন এমন অবস্থা যে কোথাও যেতে হলে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। কখন পানি নামবে, আর কখন রাস্তা ভাল হবে তা জানি না। বুধবার (২৬ মে) সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বারুইখালি গ্রামের বিলীন হওয়া রাস্তা পরিদর্শন করেন বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন।
তিনি বলেন, মোরেলগঞ্জের বেশ কয়েকটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দি রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা খুব দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে মোরেলগঞ্জবাসীর দুর্দশা রোধে বারুইখালি-মোংলা বেড়িবাঁধ, বহরবুনিয়া থেকে মোংলা পর্যন্ত নদীর পাশে গাইড ওয়াল দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে এই উপজেলার মানুষের দুঃখ ঘোচাবে বলে দাবি করেন তিনি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ঠ জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাট-রুপসা পুরাতন সড়কটির চাপাতলা এলাকায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ফলে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমাদের সাতটি সড়কের আংশিক জায়গায় পানি উঠেছে। এর ফলেণ সড়কগুলো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এসব সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আমরা এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠাবো।